মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেছেন, বর্তমান সরকার পার্বত্য চট্রগ্রামের সার্বিক কল্যানে নানামুখি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এরই অংশ হিসেবে পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা কমিশন ও সমন্বিত পর্বত উন্নয়নের আমত্মর্জাতিক সংস্থা (ইসিমোড) এর যৌথ উদ্যেগে ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় পার্বত্য চট্টগ্রামের সার্বিক উন্নয়নের জন্য এ সভা নি:সন্দেহে অত্যন্ত যুগোপযোগী ও বাস্তবমূখী। এর ফলে পার্বত্য চট্রগ্রামে দৃশ্যমান ও টেকসই উন্নয়ন তরান্বিত হবে। সাথে সাথে পার্বত্য চট্রগ্রামের মানুষ জাতীয় উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহণ করার সুযোগ পাবে।
মাননীয় উপদেষ্টা আজ ঢাকার একটি হোটেলে 7th Five Year Plan and Development Vision for Chittagong Hill Tracts শীর্ষক পরামর্শ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে এসব কথা বলেন।
পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব বীর বাহাদুর উশৈসিং, এমপি এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জনাব র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি, সাধারণ অর্থনৈতিক বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. সামসুল আলম এবং ইসিমোড- এর মহাপরিচালক ডেভিড মোল্ডেন। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইসিমোড এর টীম লিডার ড. গোলাম রসুল।
অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মাননীয় প্রতিমন্ত্রী বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের জীবনমানের কাঙ্খিত উন্নয়নে সমন্বিত ও পরিকল্পিত কর্ম-পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাসত্মবায়ন একামত্ম জরম্নরী। এজন্য সরকারের সাথে বিভিন্ন আমত্মর্জাতিক ও স্থানীয় সংস্থার সার্বিক সমন্বয়ের মাধ্যমে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। প্রতিমন্ত্রী মহোদয় আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সংবিধানের ১৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বা সম্প্রদায়ের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করেছে। ৭ম পঞ্চবার্ষিকী উন্নয়ন কর্ম-পরিকল্পনায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রস্তাবনায় উন্নয়নের এ ধারাবাহিকতাকে অবশ্যই বেগবান করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
জনাব উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন,পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নের ক্ষেত্রে স্থানীয় মানুষের চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়ে সমষ্টিগত উন্নয়নের রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ ,যোগাযোগ,বনায়ন,পর্যটন শিল্পের বিকাশ, মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহার সহজিকরণ, ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার তথা ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়নে বাস্তবায়নকারী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহকে আরো যত্নবান ও দায়িত্বশীল হতে হবে। বিশ্বায়নের এ সময়ে তথ্য-প্রযুক্তির সার্বিক ব্যবহার ছাড়া দেশের কাঙ্খিত উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই পার্বত্য চট্রগ্রামের সমন্বিত উন্নয়নে প্রামিত্মক পর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করণে এ পরামর্শক সভা অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
সভায় ইসিমোড এর মহাপরিচালক বলেন, পার্বত্য চট্রগ্রাম অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ইসিমোড এর যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে একটি বাস্তবমুখি প্রকল্প গ্রহণ ও বাসত্মবায়নে ইসিমোড বদ্ধপরিকর।
স্বাগত বক্তৃতায় জনাব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা বলেন, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য শান্তি চুক্তির ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়নের দ্বার উন্মোচিত হয়। উন্নয়নের এ ধারাবাহিকতায় ৭ম পঞ্চবার্ষিকী কর্মপরিকল্পনা পার্বত্য মানুষের দারিদ্র্য বিমোচন,কর্মসংস্থান সৃষ্টি,পর্যটন শিল্পের বিকাশ তথা উন্নয়নে তাদের প্রত্যাশা প্রাপ্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
সভায় অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলিকুজ্জামান, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মেসবাহ্ কামাল,ড. অভিজিৎ পোদ্দার, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যথাক্রমে জনাব ক্য শৈ হ্লা এবং জনাব কংজুরী চৌধুরী , বোমাং সার্কেল চীফ সাচিংপ্রু চৌধুরী,মং সার্কেলের প্রতিনিধি, বিভিন্ন উন্নয়নের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি সহ মোট ৫০ জন অংশ গ্রহণ করেন।