আজ ঢাকার লেক শোর হোটেলের অডিটোরিয়ামে পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন ফ্যাসিলিটি এর যৌথ আয়োজনে পার্বত্য চট্রগ্রাম অঞ্চলে প্রযোজ্য বিদ্যমান বিভিন্ন আইনের মধ্যে সমন্বয়ের জন্য দিনব্যাপি একটি জাতীয় কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সম্মানিত সচিব জনাব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরার সভাপতিত্বে কর্মশালায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. গওহর রিজভী প্রধান অতিথি এবং মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর পলিন ট্যামেসিস বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দূতাবাসের কর্মকর্তা, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাগণ, পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যান, পার্বত্য তিন জেলা প্রশাসক, চাকমা রাজা ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ, মং ও বোমাং সার্কেল ও পার্বত্য চট্রগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের প্রতিনিধি এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিসহ প্রায় ১৩০জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।
কর্মশালায় অধ্যাপক ড. গওহর রিজভী বলেন, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত পার্বত্য চট্রগ্রাম চুক্তির মূল বিষয়সমূহকে প্রাধান্য দিয়ে এ অঞ্চলের জন্য বিদ্যমান বিভিন্ন আইনের মধ্যে সার্বিক সমন্বয় একান্ত জরুরী। কেননা সম্পূর্ন সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে স্বাক্ষরিত এ চুক্তি পার্বত্য চট্রগ্রামের স্বাতন্ত্র্য ও বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণের পাশাপাশি সাম্প্রাদায়িক সম্প্রীতি ও পারষ্পরিক সহনশীলতার মেলবন্ধন তৈরি করে।
জনাব বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেন, পার্বত্য চট্রগ্রামের আইনসমূহের মধ্যে সমন্বয় ও যথাযথ প্রয়োগের জন্য যে কর্মপরিকল্পনা তা পার্বত্য চুক্তির পূর্নবাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রচেষ্টাকে বেগবান করবে। সমন্বয়ের প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে এ সংক্রান্ত জাতীয় ও পার্বত্য চট্রগ্রাম অঞ্চলে প্রযোজ্য বিভিন্ন আইনের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান নিশ্চিত করতে হবে। সাথে সাথে এ সংক্রান্ত আইনের বিধি ও প্রবিধান প্রণয়নে খুটিনাটি বিষয়সমূহ পর্যবেক্ষনের জন্য প্রতিমন্ত্রী মহোদয় সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
কর্মশালায় পলিন ট্যামেসিস বলেন, পার্বত্য চট্রগ্রামের আইনসমূহের সামঞ্জস্য বিধানে ইউএনডিপি বাংলাদেশ সরকারের সাথে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে শক্তিশালী অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে পার্বত্য চট্রগ্রামের জন্য একটি টেকসই আইনি কাঠামো তৈরিতে ইউএনডিপি সার্বিক সহযোগিতা করতে বদ্ধপরিকর।
অনুষ্ঠানে সভাপতির ভাষনে জনাব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা বলেন, বিশেষ ব্যবস্থা ও আইনের মাধ্যমে ব্রিটিশ আমল থেকে পার্বত্য চট্রগ্রাম পরিচালিত হয়ে আসছে। বর্তমানে এখানে নির্দিষ্ট আইন বলে একাধিক প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো বিদ্যমান রয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন আইন, বিধান ও বিধি দ্বারা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হয়ে আসছে। প্রচলিত এসব আইন ও বিধিসমূহের মধ্যে একটি সামঞ্জস্যপূর্ন কাঠামো তৈরিতে জাতীয় এ কর্মশালা নি:সন্দেহে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে। এ উদ্দেশ্য সফল হলে পার্বত্য চট্রগ্রামে সমন্বিত উন্নয়ন নিশ্চিত করার পাশাপাশি সামগ্রিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে বলে সচিব মহোদয় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।