ঢাকা, ২২ আগস্ট ২০১৭
সাম্প্রতিক সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমিধ্বসে বহু প্রাণহানি ও রাস্তাঘাট এবং অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যেগে আজ পার্বত্য অঞ্চলের এ ভূমিধ্বস: কারণ ও প্রতিকার বিষয়ক দিনব্যাপি একটি সেমিনার সিরডাপ আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে পাহাড় ধ্বসের কারণ হিসেবে পাহাড় কাটা, বৃক্ষনিধন, অপরিকল্পিত আবাসন ও রাস্তার ড্রেনেজ ব্যবস্থা, অপরিকল্পিত জুম চাষ, অতিবৃষ্টি তথা জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবকে চিহ্নিত করা হয়। এই ভূমিধ্বসের প্রতিকার ও করণীয় হিসেবে আগাম সতর্ক সংকেত, পাহাড় উপযোগী গৃহ নির্মাণ নীতিমালা প্রণয়ন, পর্যাপ্ত আশ্রায়ন ব্যবস্থা, ভূমি ব্যবহার নীতিমালা সর্বোপরি সর্বস্তরের মানুষকে এ বিষয়ে ব্যাপক জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে।
মন্ত্রণালয়ের সচিব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. গওহর রিজভী প্রধান অতিথি এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং, সংসদ সদস্য উষাতন তালুকদার ও বেগম ফিরোজা বেমন চিনু বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারে ড. গওহর রিজভী ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত শান্তি চুক্তির বাস্তবায়ন প্রসংগে বলেন, শান্তি চুক্তির শর্তমোতাবেক অধিকাংশ সরকারী বিভাগ সংশ্লিষ্ট পার্বত্য জেলা পরিষদে ন্যাস্ত করা হয়েছে। যার ফলে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেন, শান্তিচুক্তির পূর্ববর্তী সরকারগুলোর অপরিনামদর্শী পদক্ষেপের ফলে ভারসাম্য বিনষ্ট হয় ফলে পাহাড়বাসীকে প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট নানা দূর্যোগ মোকাবেলা করতে হচ্ছে। তিনি পার্বত্য অঞ্চলের ভূমিধ্বস রোধে সরকারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগীতা কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে বীর বাহাদুর উশৈসিং বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমিধ্বসের কারণ ও প্রতিকার বিষয়ক এ সেমিনারের সার সংক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে সুনির্দিষ্ট কর্মকৌশল নির্ধারণ করা হবে। এ এলাকায় টেকসই উন্নয়নে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য বজায় রাখার জন্য তিনি উদাত্ত আহ্বান জানান।
সেমিনারে ভূমিধ্বস এর কারণ ও প্রতিকার বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এম শামসুল ইসলাম, সমন্বিত পর্বত উন্নয়নের আন্তর্জাতিক সংস্থা(ইসিমোড) এর ভূ-তত্ত্ববিদ প্রফেসর সামজাল রত্না বজরাচারিয়া (Prof. Samjwal Ratna Bajracharya) এবং অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল পরিমল বিকাশ চাকমা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো: কামাল উদ্দিন তালুকদার। পরে উন্মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমিকমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হক চৌধুরী, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানবৃন্দ, তিন পার্বত্য জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দেশী বিদেশী সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ১৫০ জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।